Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

উত্তরাঞ্চলে সুুুগন্ধি ধানের সম্ভাবনা ও চাষ পদ্ধতি

বিশেষ জাতের ধান থেকে সুগন্ধি চাল তৈরি হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশে আমন ও বোরো মৌসুমে সুগন্ধি ধান চাষ করা সম্ভব। উত্তরাঞ্চলে প্রধানত দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, নওগাঁ,  রাজশাহী জেলায় সুগন্ধি ধান উৎপাদিত হয়। কাটারিভোগ ধানের আতপ চালের পোলাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। কাটারিভোগ ধানের চিঁড়া হয় হালকা ধবধবে সাদা ও এতে আছে মিষ্টি সুগন্ধ। আদিকাল থেকে সুগন্ধি চাল অভিজাত শ্রেণির আচার অনুষ্ঠানে স্থান পায়। আজও দিনাজপুরের কাটারিভোগ সুগন্ধি চাল দেশি-বিদেশি অতিথি আপ্যায়নে সুনাম বজায় রেখেছে। সুগন্ধি চালের পোলাও ছাড়া পিঠা-পুলি, বিরিয়ানি, জর্দা, পায়েশ ও ফিরনি বেশ চমৎকার ও সুস্বাদু-যা জিভে জল আনে। এখনও দিনাজপুরের কৃষকরা মসজিদে মিলাদে এবং লক্ষ্মী-নারায়ণ পূজায় এ চাল ব্যবহার করে থাকে।

 

জাত : আমাদের দেশে আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে বিআর৫, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৮০ ও বিনাধান-১৩ এবং স্থানীয় জাতের মধ্যে কাটারিভোগ, কালিজিরা, চিনিগুড়া, চিনি আতপ, বাদশাভোগ, খাসকানী, বেগুনবিচি, তুলসীমালা উল্লেখযোগ্য। ব্রি ধান৩৪ স্থানীয় সুগন্ধি জাতের ধান চিনিগুড়া বা কালিজিরার মতোই অথচ ফলন প্রায় দ্বিগুণ। কৃষকেরা এ ধানের আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন। তাছাড়া আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় আমনে বন্যাপ্রবণ এলাকায় নাবিতে রোপণ উপযোগী। ব্রি ধান৭০ ও ৮০ আমন মৌসুমে ব্রি কর্তৃক সর্বশেষ উচ্চ ফলনশীল সুগন্ধি ধান এবং আলোক অসংবেদনশীল। গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪.৫-৫.০ মেট্রিক টন যা কাটারিভোগ ধানের চেয়ে দ্বিগুণ। ব্রি ধান৭০ ধানের চাল দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগের চাইতে আরও বেশি লম্বা। আর ব্রি ধান৮০ থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় জেসমিন ধানের মতো, সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু। অপরদিকে বোরো মৌসুমে সুগন্ধিযুক্ত আধুনিক জাত হচ্ছে ব্রি ধান৫০ (বাংলামতি)। এ জাতের চালের মান বাসমতির মতোই। হেক্টর প্রতি ফলন ৬ মেট্রিক টন। তবে চাল তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতি এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।


মাটি ও জলবায়ু : ফুল আসা থেকে পরিপক্বতা পর্যন্ত যথাযথ সুগন্ধি শস্য দানার জন্য প্রয়োজন সামান্য আর্দ্রতা, মৃদু বাতাস, শীতল রাত্রি  অর্থাৎ ২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং রৌদ্রোজ্জ¦ল আলোকিত দিন অর্থাৎ ২৫-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সব ধরনের মাটিতেই সুগন্ধি ধানের চাষ করা যায় তবে দো-আঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি উত্তম।


বীজ বপনের সময় : বোরো মৌসুমে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ এবং রোপা আমন মৌসুমে ১৫ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত বীজতলায় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। তবে স্বল্পমেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের ২য়-৩য় সপ্তাহ বপন করার উত্তম সময়।
 

সার ব্যবস্থাপনা : সুগন্ধি ধানের জমিতে প্রতি বিঘা বা ৩৩ শতকে আমনে আধুনিক জাত বিআর৫, ব্রি ধান৩৪, ৩৭, ৩৮, ৭০, ৮০ বা বিনাধান-১৩ এর ক্ষেত্রে ইউরিয়া ১৮-২০ কেজি, টিএসপি ১০-১২ কেজি, এমওপি ৯-১০ কেজি, জিপসাম ৮ কেজি, দস্তা ১ কেজি  হারে প্রয়োগ করতে হয়। আমনে স্থানীয় জাত যেমন-কাটারিভোগ, কালিজিরা ইত্যাদি জাতের ক্ষেত্রে ইউরিয়া ১০ কেজি, টিএসপি ৬ কেজি, এমওপি ৬ কেজি, জিপসাম ৩ কেজি, দস্তা আধা কেজি  হারে প্রয়োগ করতে হয়। আর বোরো মৌসুমে ব্রি ধান৫০ জাতের ক্ষেত্রে ইউরিয়া ৩০-৩৫ কেজি, টিএসপি ৭-১০ কেজি, এমওপি ৯-১০ কেজি, জিপসাম ৮-১০ কেজি, দস্তা ১ কেজি  হারে প্রয়োগ করতে হয়। মাটির উর্বরতাভেদে সার ও তার পরিমাণ কম বেশি হতে পারে।
তবে শুধু রাসায়নিক সার দিয়ে চাষ করলে আধুনিক জাতে স্থানীয় জাতের ধানের মতো সুগন্ধিযুক্ত হয় না। তাই প্রচুর জৈব সার ব্যবহারের মাধ্যমে চাষাবাদ করা হলে সুগন্ধি চাল তার নিজস্ব সুঘ্রাণ ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এজন্য শতক প্রতি ৪ কেজি ভার্মি কস্পোস্ট সার ব্যবহার করতে পারেন।


রোগ ব্যবস্থাপনা : বোরো ও আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের জাতগুলো সাধারণত ব্লাস্ট রোগের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে থাকে। সেজন্য আগাম সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সুগন্ধি ধানের জাতে ব্লাস্ট রোগ হোক বা না হোক শীষ বের হওয়ার আগে ট্রাইসাইকা¬জল/স্ট্রবিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় শেষ বিকেলে ৫-৭ দিন অন্তর দু’বার স্প্রে করতে হবে। এছাড়া বীজতলায় বীজ ফেলা থেকে শুরু করে ঘরে ধান তোলা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিচর্যা স্বাভাবিক ধান চাষের মতোই।


ফসল সংগ্রহ : ধান পরিপক্ব হলে অর্থাৎ অধিকাংশ ধানের ছড়ায় শতকরা ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে ধান কাটতে হবে। মাড়াইয়ের পর ধান কয়েক বার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে যেন আর্দ্রতা শতকরা ১২ ভাগের নিচে থাকে। লম্বা আকারের সুগন্ধি ধান থেকে আস্ত চাল পেতে হলে রাবার হলার মেশিন ব্যবহার করা প্রয়োজন।


শেষকথা : অনেক ক্ষেত্রে এ দেশি অতি উন্নতমানের সুগন্ধি চালের জাতগুলো সম্পর্কে ধারণা ও প্রচারণার অভাব থাকায় নামি-দামি হোটেলে আমাদের জনপ্রিয় সুগন্ধি ধানের পরিবর্তে বিদেশি বাসমতি জাতের চাল ব্যবহার প্রচলন দেখা যায়। বর্তমান সরকার সুগন্ধি ধান রপ্তানিতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে বিশে^ও প্রায় ১৩৬টি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হচ্ছে। সুগন্ধি চালের দেশীয় বাজার চাহিদা বাড়ালে কৃষকের সুগন্ধি চালের উৎপাদন ও এর ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। উচ্চ ফলন ও যথোপযুক্ত প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সুগন্ধি চাল রপ্তানি আরো অধিক লাভজনক করা যেতে পারে।

 

কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম১
কৃষিবিদ মোহাম্মদ গোলাম মাওলা২

১আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস এর আঞ্চলিক কার্যালয়, রংপুর, ০১৭১৯৫৪৭১৭৯; ২বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ঢাকা, ০১৭১৬৮০৬১৭১

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon